০২ মে ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৬:৫৫:১৩ পূর্বাহ্ন


রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশে মির্জা ফখরুল
`এ সরকার হটিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে'
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-১২-২০২২
`এ সরকার হটিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে' রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ধানের শীষ প্রদর্শন করেন নেতাকর্মীদের/ছবি সংগৃহীত


রাজশাহীতে বিএনপির বিশাল জনসভায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘এ সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনতিকে ধ্বংস করেছে। রাজনীতির কাঠামোকে হত্যা করেছে। তত্ববাধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের চন্য এই সরকার আন্দোলন করেছিল। কিন্তু তারা ক্ষমতায় এসে সে পদ্ধতি বাতিল করেছে। কিন্তু তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচন হবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে এই লুটেরা সরকারকে হটিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। এ জন্য সবাইকে আন্দোলনে নামতে হবে।’ 

শনিবার  রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘদিন থেকেই বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে যে সমাবেশগুলো করে আসছে সে সমাবেশের ধারাবাহিকতাতেই ছিল রাজশাহীর সমাবেশও। মুলত নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে নেতাকর্মীদের মৃত্যুর প্রতিবাদ, এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবীতে এ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। অন্যান্য স্থানের মতই এ সমাবেশ কেন্দ্র করে পরিবহন ধর্মঘট ছিল যথারীতি।

রাজশাহীতে বিএনপির জনসভায় আগত উৎফুল্ল মানুষ/ছবি সংগৃহীত 


মানুষ বিভিন্নভাবে এসে উপস্থিত হয় সমাবেশে। এবং সেটা দুদিন আগ থেকেই। তাবু টানিয়ে অবস্থান করে। প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করেও মানুষ নিজস্ব ব্যবস্থায় সমাবেশে আসলে জনতার যেন ঢল নামে রাজশাহীতেও। 

মির্জা ফখরুল এ সমাবেশে যোগ দিতে আগের দিন বিকেলে পৌছান। এবং সমাবেশস্থলে যেয়ে হাজির হয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের শান্তনা দেন। 

সমাবেশ নির্ধারিত সময়ে আগে শুরু হয়ে যায়। এতে রাজশাহী ছাড়াও উক্ত অঞ্চলের বিভিন্নস্থান থেকে জড়ো হন এসে। 

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়। লুটেরাদের সরকারে পরিণত হয়েছে। এরা দেশের টাকা লুট করে বেগমপাড়া আর সেকেন্ড হোম গড়ে তুলেছে। এ দানবীয় সরকার অনির্বাচিত সরকার অস্তিত্ব সংকটে পড়ে বিরোধীদলকে হামলা মামলা গুম খুন দিয়ে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টায় মেতেঠে। কিন্তু পারেনি। এখন তারা ভয়ে আছে। আজ আমরা মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেমেছি।’ 

দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও লুটপাটের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের আমলে পচিশ হাজার মানুষ কোটিপতি হয়েছে। ৩০ লাখ মানুষ আরোও গরিব হয়েছে। এ সরকার কি পচিশ হাজার মানুষের? লুটপাটের সরকারকে বিদায় করতে হবে।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলে আমাদের ৬০০ নেতা-কর্মী গুম হয়েছে। এরমধ্যে পাবনার ঈশ্বরদীতে জাকারিয়া পিন্টু সহ ১৬ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। ২৫ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে- এটাই সরকারের চরিত্র এভাবে তারা বিরোধী দলকে নির্মূল করতে চায়। তাতে কি নির্মূল হয়েছে? রাজশাহীর মানুষকে ভয় পেয়েছে? পায়নি। তো আরো উত্তাল হয়ে জেগে উঠেছে। এই লড়াইয়ে আমাদের জয়ী হতেই হবে। তিনি বলেন, কোথায় ১০ টাকার চাল। ঘরে ঘরে চাকরি। হ্যাঁ চাকরি দিয়েছে নিজেদের লোকদের। সেখানে ২০ লাখ টাকা করে দিতে হয়েছে। 



রাজশাহীর জনসভায় সাধারন মানুষের বক্তব্য ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন/ছবি সংগৃহীত 


মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনাসহ দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। এ জন্য দেশের বিভাগীয় আন্দোলন শেষে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সম্মেলন সফল করতে হবে। 

সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মিজানুর রহমান মিনু, হারুন অর রশিদ এমপি, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি এরশাদ আলী ইশা।   


শেয়ার করুন